ক্যাম্পাসে জিতেছে শিবির, জাতীয় নির্বাচনে কে?

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী’ প্যানেল জয়লাভ করেছে। একইভাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনেও আরেকটি বড় জয় তাদের ঘরে গেছে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ছাত্র সংসদে ইসলামপন্থীদের এই উত্থান রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
দেশি-বিদেশি অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এসব জয় ছাত্ররাজনীতিতে ইসলামপন্থী আধিপত্যের প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত বহন করছে। এমনকি জাতীয় রাজনীতিতেও ইসলামপন্থী উত্থানের পূর্বাভাস হতে পারে। এ ছাড়া রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে ‘শিবির নিয়ন্ত্রিত ক্যাম্পাস’ শিরোনাম দখল করেছে দেশের সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক আলাপচারিতা।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) অনলাইন দ্য ডিপ্লোম্যাটে এসব কথা লিখেছেন সাংবাদিক জান্নাতুল নাঈম পিয়াল।
প্রকাশিত নিবন্ধে আরও বলা হয়, বাস্তবতা হয়তো আরও জটিল। শিবিরের এ জয়গুলো যতটা নাটকীয়, তা ইসলামপন্থার প্রতি তরুণ ভোটারদের আকস্মিক ঝুঁকে পড়াকে প্রতিফলিত করে না। বরং এটি প্রকাশ করছে আরও সূক্ষ্ম অথচ সমান শক্তিশালী এক প্রবণতাকে। তা হলো জেনারেশন জেডের (জেনজি) মধ্যে কৌশলগত ভোট দেওয়ার প্রবণতা। তারা প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগকে অর্থবহ করতে বদ্ধপরিকর। এ মনোভাব হঠাৎ কোনো ইসলামপন্থী ঢেউ নয়। সম্ভবত তা নির্ধারণ করবে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল।
রাজনৈতিক বিজ্ঞানে কৌশলগত ভোট একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধারণা। বহুদলীয় ব্যবস্থায় ভোটাররা প্রায়ই তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ছেড়ে দেন যদি মনে হয় তিনি প্রকৃতপক্ষে জিততে পারবেন না। পরিবর্তে তারা এমন প্রার্থীকে বেছে নেন, যিনি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারানোর বেশি সম্ভাবনা রাখেন। বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতিতে এ ঘটনাটি চোখে পড়ার মতো স্পষ্ট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পৃথক নির্বাচনে অনেক শিক্ষার্থী স্বীকার করেছেন যে, তাদের ভোট আদর্শ দিয়ে নয়, বাস্তবতায় প্রভাবিত হয়েছে। যদিও বিএনপির ছাত্রদল, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ এবং বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন এখনও কিছু সমর্থন ধরে রেখেছে। কিন্তু ভোটবাক্সে তা প্রতিফলিত হয়নি। কারণটা সরল। তা হলো- এসব দল শিবিরকে হারাতে সক্ষম মনে হয়নি, তাই তাদের জন্য ভোট দেওয়া ছিল বৃথা।
Post a Comment