আয়নাঘরে বন্ধুকে কীভাবে হত্যা করা হয়, জানালেন ফারুকী
২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ঢাকা মহানগর ৩৮ (বর্তমান ২৫) নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমন। এরপর আর খোঁজ মেলেনি তার।অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মী ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে আজ বুধবার সকালে আয়নাঘর পরিদর্শনে যান। এদিন ঢাকার কচুক্ষেতে ডি জি এফ আই এবং উত্তরা ও আগারগাঁওয়ে র্যাবের আয়নাঘর পরিদর্শন করেন তারা।
এবার পরিদর্শন শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ‘আয়নাঘর’ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। তিনি বিএনপি নেতা সাজেদুলকে আয়নাঘরে কিভাবে হত্যা করা হয় তার বর্ণনা দিয়েফেসবুকে ফারুকী লিখেছেন, ‘এ রকমই কোনো একটা ঘরে হয়তো আমার বাল্যবন্ধু সাজেদুল ইসলাম সুমনকে আটকে রাখা হয়েছিল। এ রকমই কোনো একটা ঘরে অজানা আশঙ্কায় সে কেঁপে কেঁপে উঠতেছিল।’
গুমের শিকার বন্ধু সাজেদুল ইসলাম সুমনকে স্মরণ করে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি আবেগঘন পোস্ট দেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা।
তিনি আরও লেখেন, ‘এই রকম একটা ঘরে বসেই হয়তো সে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে কাঁদতে কাঁদতে বলছিল- আল্লাহ, তুমি আমারে এই বারের জন্য বাঁচাইয়া দাও। আমি আর রাজনীতি টাজনীতি করব না। আমার সন্তানের জন্য আমারে বাঁচাইয়া দাও। আমার মায়ের জন্য আমারে বাঁচাইয়া দাও।’
আরও পড়ুনঃ একদিন ছুটি নিলেই মিলবে ৪ দিনের ছুটি
তিনি লিখেছেন, ‘এ রকমই একেকটা ঘরে আমরা সতেরো কোটি মানুষ আটকা ছিলাম ষোলো বছর। আর গোপনে বলতাম, আল্লাহ এই ডাইনির হাত থেকে আমাদের বাঁচাইয়া দাও।’
ফারুকী লেখেন, ‘সুমনের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয় উত্তরার এক হাসপাতালে লুকাইয়া থাকা অবস্থায়। ওর ভাগনে আবরারের একটা শুট ছিল আমার সঙ্গে। স্পষ্ট মনে আছে ওর শেষ কথা, ‘দোস্ত, আবরাররে তুই ইজি কইরা নিস। নাইলে অ্যাকটিং খারাপ করব’।’
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা লেখেন, ‘এমনই এক জালিমের শাসনে ছিলাম যে তোর জন্য, সুমন, একটা কথাও বলতে পারি নাই। পরে জানলাম মানুষরূপী জানোয়ার জিয়াউল আহসানের নির্দেশে তোরে ইনজেকশন দিয়ে মেরে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়। যে বাবার ঘরে ফিরে সন্তানের সঙ্গে ভাত খাওয়ার কথা ছিল তাকে এই ডাইনির দল শীতলক্ষ্যার মাছেদের খাবারে পরিণত করে।’
আরও পড়ুনঃ সাঁতার জানার পরও কেন সুইমিংপুলে ডুবে মারা গেলেন ঢাবি ছাত্র সোহাদ?
তিনি লেখেন, ‘এই হায়েনাদের হয়ে যখন কেউ কথা বলতে আসে, আমার মাথায় রক্ত উঠে যায়। আমি আমার কমপোজার লুজ করি।’ছেন।
Post a Comment